Select Page
ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়। কন্যা বা মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ কি?

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়। কন্যা বা মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ কি?

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়। ভালো সন্তান বা ছেলে সন্তান আথবা মেয়ে বা কণ্যা সন্তান হওয়ার বিভিন্ন উপায় বা আমল রয়েছে। যেগুলো আনুসরন বা আমল করলে ছেলে বা মেয়ে যে সন্তান জন্ম গ্রহন করে তারা ভালো সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ আমরা বিখ্যাত রতিশাস্ত্র থেকে এসব নিয়ে আলোচনা করব।

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়

বিভিন্ন দিনে নারীগমনের  ফলে পুত্র-কন্যা সন্তানভেদ।

শিব তারপর বললেন, নারীগমন সম্পর্কে যেসব বিধান বললাম, তা ছাড়াও শাস্ত্রে আরও বিধান আছে। যেমন প্রথম বিধান হলাে ঋতুর পর চতুর্থ দিবসে অর্থাং স্নানের পর নারী পতির কাছে যেতে পারে বটে, কিন্তু যে দিন মঘা কিংবা মূলা নক্ষত্র হয় সেদিন ষত্বের সঙ্গ পরিহার করতে হবে। অর্থাৎ সেই সেইদিন কদাচ নারীগমন করবেনা।

এবারে মহাদেব ভিন্নশাস্ত্র অনুসারে কোন দিন কি ধরণের সন্তানের জন্ম হুয়,সে বিষয়ে বর্ণনা করলেন।

তিনি বললেন, ঋতুর চতুর্থ দিবসে গর্ভধারন করলে সেই গর্ভে অল্পায়ু এবং ধনহীন পুত্র জন্মগ্রহন করে। পঞ্চম দিনে গর্ভ হলে কন্যা, ঘষ্ঠ দিনে সুমধ্যম পুত্র হয় । সপ্তম দিনে গর্ভ হলে বন্ধা কন্যা এবং অষ্টম দিনে গর্ভ হলে সেই গর্ভে ধনবান পুত্র উৎপন্ন হয়। নবম দিনে গর্ভধারণ করলে সৌভাগ্যবতী কন্যা, দশম দিনে শ্রেষ্ঠ পুত্র সন্তান লাভ করে থাকে।

একাদশ দিনে গর্ভ হলে অধার্মিক কন্যা এবং স্বাদশ দিনের গর্ভে  শ্রেষ্ঠ পুত্র জন্ম গ্রহণ করে।

ত্রয়ােদশ দিনে গর্ভ হলে সেই গর্ভে মহাপাপীয়সী বর্ণসঙ্করকারিণী কন্যার উৎপত্তি হয়ে থাকে।  চতুর্দশ দিনে যে নারী গর্ভধারণ করে তার সেই গর্ভে ধর্মজ্ঞ কৃতজ্ঞ আত্নবেদী ও দৃঢ়ব্রত পুত্র জন্মে।

পঞ্চদশ দিনে গর্ভ হলে পতিব্রতা কন্যা এবং ষােড়শ দিনে গর্ভধারণ করলে সেই গর্ভে সর্ব ভূতের আশ্রয় স্বরূপ পরম ধার্মিক, সুলক্ষণক্ত, সর্বশ্রেষ্ঠ পুত্র জন্মে। এই পুত্র বংশের সুনাম বৃদ্ধি করে সারা দেশ সেই পুত্রের খ্যাতিতে ভরে ওঠে।

রাত্রে চতুর্থাং পুত্র। স্যাদল্লায়ুধনবর্জিত ।

পঞ্চম্যাং.পুত্রিণী ষষ্ঠাং পুত্রো সুমধ্যমঃ ॥

সপ্তম্যাম প্রজ। যেষিদষ্টমামীশ্বরঃ পুমান।

নবম্যাং সুভগা নারী দশম্যাং প্রবরঃ সুতঃ।

একাদশামধৰ্ম্মা স্ত্রী দ্বাদশ্যং পুরুষােত্তম।

ত্রয়ােদ শ্যাং সুতাং পাপাং বর্ণসঙ্করকারিণীম ।

ধৰ্ম্ম জ্ঞশ্চ কৃতজ্ঞশ্চ আ ত্মবেদী দৃঢ়ব্রত।

প্রজায়াতে চতুর্দশাং পঞ্চদ্যাং পতিব্রত।।

আশ্রয়ঃ সৰ্ব্বভূতানাং ষােড়শ্যাং জায়তে পুমান।

শাস্ত্রে আরও বর্ণনা করা হয়েছে যে স্বামী বা স্ত্রী রােগগ্রস্ত কিংবা

নারী গমনের কালাকাল বিচার।

কোন কোন দিন নারীগমন করা উচিত, কোন দিন উচিত নয়,গমন করলে কোনদিন কি ফল হয়, আর দোষের জন্য নারীগর্ভে যে সন্তানের জন্ম হয়, সে কি প্রকার ফল পায় তা প্রবণ করতে অমার ঝুব ইচ্ছা হয়েছে। হে দেব, ঘদি আমার প্রতি আপনার করুণা দৃষ্টি থাকে, তা হলে এই সমন্ত ষথাষথভাবে আমার কাছে কীর্তন করুন।

শ্রতং পদ্মপুরাণোক্তং রতিশাস্ত্রং মহাত্মনা।
অশ্রতং চাস্তি যচ্চেব তদত্রবীহি মহ্প্বর: ॥
অগম্যাদিবসান ব্রহি গমনে কিং ফলং ভবেং ।
গমনাজ্জায়তে যোহসৌ কীদৃশাে বা ভবিষ্যুতি।
এতৎ সর্ব্বং সমাচক্ষ যদি তে অস্তি কুপাময়ি ।

শিব বললেন-হে দেবি, তুমি যা জিজ্ঞাসা করেছ তা বলছি, মন দিয়ে শােন। হে দেবি, রতিশাস্ত্র সম্পূর্ণ জানতে পারলে তুমি যে পরম জ্ঞানবতী হবে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই। শোন দেবি,

প্রবক্ষ্যামি যৎ পৃষ্টং সাম্প্রতং ত্বয়া।
রতিশাস্ত্রং বিদিত্বা ত্বং লহাজ্ঞানবতী ভবেঃ ।

নারীগমনের নিষিদ্ধ দিন

শিব বললেন -হে পার্বতি, চতুর্দশী, অষ্টমী, প্রতিপদ, পৃর্ণিমা,অমাবস্যা, সংক্রান্তি, একাদশী এই সমন্ত দিন নারীগমনের পক্ষে বর্জনীষ্ জানবে। এ ছাড়াও পিতৃশ্রাদ্ধদিন, যাত্রাকাল অর্থাৎ কোথাও যাত্রার সময়ে ও রবিবার -এই কয়দিনও নারীগমন বিবর্জনীয়। এই সমস্ত দিনে ও সময়ে কখনও নারীগমন করবেনা, তাহলে সদা কুফল ভুগ করতে হয়। এবং বিপদ গ্রন্ত হতে হয়। রতিশাস্ত্রে মহাজ্ঞানী ব্যক্তিরা এইরুপ নির্দেশ দিয়েছেন ।

নারীগমনদোষে পুত্র-কন্যার অবস্থা।

শিব বললেন-হে দেবি, স্ত্রীগমনদোষেই পুত্র-কন্যা দুখঃভাোগী ও অল্পায়ু হয়ে থাকে বলে মনে রাখবে। সেই সব বিষয়েই বিস্তুত বলা হচ্ছ।

বিবাহ হতে না হতেই অর্থাৎ কমল অপূর্ণ থাকলে সেই নারীর সঙ্গে সহবাস করলে যথাসময়ে সেই নারীর গর্ভে থে সন্তান হুয়, সে দীর্ঘজীবী হয় না। আল্প দিনের মধ্যেইি সে মৃত্যু মুখে পতিত হয়ে থাকে। ষদি কোন ব্যক্তি অসুস্থ থাকে তবে সে সময়ে তার নারীগষন করা উচিত নয়। ঘদি সেই গর্ভে কোনও পুত্রকন্যা জন্মে, তবে তারা চিরদিন দুঃখভােগ করে থাকে। অতএব বৃদ্ধিমান ব্যক্তিরা এই সব কথা বিবেচন করে নারীগমন করবে।

 

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়

রাত্রির প্রহরভেদে নারীগমনের ফল ও সেই গর্ভজাত সন্তানেরর অবস্থা।

শিব বললেন হে পার্বতি, রাত্রির প্রহরভেদে নারীগযন করলে যেরূপ ফল হয় এবং সেজন্য পুত্র ও কন্যা হলে তাদের যে অবস্থা হয়, তা বলছি শ্রবণ কর।

হে দেবি, রাত্রির প্রথম প্রহরে নারীগমন করলে তৎ-ঔরসে সেই নারীর গর্ভে যে সন্তান হয়, তা সে পুত্র বা কন্যা যাই হােক, তারা দীর্ঘজীবী হয় না। খুব অল্প দিনেই তার মৃত্যু হয়।

যে লােক রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরে নারীগমন করে, তার ফলে পুত্র কন্যা যা হয়, তারা অবশ্য দীর্ঘদিন বাঁচে, কিন্তু তারা খুব দরিদ্র হয়, তারা সৌভাগ্য লাভ করে না।

হে মহেশ্বরি, রাত্রির তৃতীয় প্রহরে ঘদি কোনও পূরুষ নারীগমন করে, তা হলে সেই নারীর গর্ভে যে কন্যা সন্তান হয়, সে  ব্যভিচারিণী এবং পুত্র হলে যারপরনাই অভাজন হয়। সেই দুর্যয় দুর্মতি  পুত্র চিরদিন পরের দাস্যবৃত্তি করে কালযাপন করে থাবক।

হে প্রিয়ে, সুবুদ্বিযুক্ত প্রতিটি মানুষ নিজের কল্যাপের জন্য এই সমস্ত শাস্ত্র বিশেষ পর্য্যালােচনা করে ঘথাযথ আচরণ  করে থকেন।

রাত্রেপ্ত প্রথমে যাম ঋতুং রক্ষতি যে নর।
তস্থ পুনশ্চ কন্যা বা অচিরাৎ স্রিয়তে প্রুবং ।
গচ্ছেচ্চ কামিনীং কোহপি দ্বিতীয় প্রহরে যদি।
কুমতি-দুজ্জ নষ্চেব দাস্যবৃত্তিং করােত্যসৌ।
চতুর্থ প্রহর যাে হি নারীং গচ্ছতি কামতঃ ।
পুত্রাে স লভতে মত্ত্যা হরিভক্তি পরায়ণং ।

দিনের বেলা নারীগমনের ফল।

শিব বললেন-হে পার্বতি, কি আর তােমার কাছে বর্ণনা করব বল। দিনের বেলা কোন সময়েই কোন পুরুষের নারীবিহার করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি নিজের মঙ্গল চায়, বৃদ্ধিমান, জিতেন্দ্রিয় তার পক্ষে দিনের বেলা কোনও সময়ই নারীগমন করা উচিত নয়। দিনের বেলা নারীগমন করলে সেই গর্ভে যে পুত্র বা কন্যা হয়, তারা দুঃশীল, দুর্দান্ত, দুরাচার ও ধর্মহীন হয়ে থাকে। এতে কোন অন্যথা নেই। রতিশাস্ত্র অনুযায়ী এই বিধান একান্ত অমােঘ ও ধ্রুব, এট। মনে রাখা অবশ্য কর্তব্য ; তাই দিবাভাগে নারীগমন একাস্ত বর্জনিয়।

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়

ঋতুর চতুর্থ দিন থেকে চতুর্দশ দিন পর্য্যন্ত নারীগমনের ফল।

এবারে মহাদেব একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয় সম্বস্কে বর্ণনা করতে উদ্যত হলেন। তা হলো ঋতুর চতুর্থ দিন থেকে চতূর্দশ দিন পর্যসন্ত নারীগমনে কি ফলাফল হয়। সেই অবশ্য জ্ঞাতব্য বিষয় বর্ণনা করলেন তিনি।

কোন দিনে নারীগমন করলে তার  গর্ভন্থ সন্তানের কি অবস্থা হয়, তাও বর্ণনা করলেন তিনি।

ঋতুর শেষে চতুর্থ দিন নারী স্নান করলে শুদ্ধ হয়। এর আগে নারীগমন একান্তুভাবে বর্জনীয়-তা আগেই বর্ণন করা হয়েছে।
চতুর্থ দিনেও নারী প্রথম প্রহরে অগম্যা থাকে। কিন্তু পরবতী প্রহরে নারীগমন করলে সেই গর্ভে যে পুত্র হয়, সে পরম ধর্মপরায়ণ হয়ে থাকে।

সুত্রঃ বৃহৎ রতিশাস্ত্র

নারী দের শরীরে সুখ দুঃখ এর লক্ষণ বা চিহ্ন

নারী দের শরীরে সুখ দুঃখ এর লক্ষণ বা চিহ্ন

নারীঃ নারীদের সুখ দুঃখের লক্ষণ বর্ণনা

কি কি লক্ষণ পুরুষের দেহে থাকলে সে সুখী হয় আর কি কি লক্ষণ পুরুষের দেহে থাকলে সে দুঃখ পায়, এর আগে মহাদেব সে বিষয়ে বর্ননা করলেন।

এবারে নারীজাতির দেহে কি কি চিহ্ন থাকলে তারা সুখী হয় আর কি চিহ্নের ফলে তারা দুঃখ পায়, মহাদেব একে একে তার বর্ণনা করতে লাগলেন।

যে নারীর যােনি কূর্মপৃষ্ঠের মত ( কচ্ছপের পিঠের মত) অথবা গজ স্কন্ধের (হাতীর কাধের) মত, সে যাবজ্জীবন পরম সুখে দিন কাটায়।।

কচ্ছপের পিঠের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে তার অর্থ—যদি ভগদেশ উচ্চ ও পুষ্ট হয় তাহলে তা দৃঢ়সংবদ্ধ ও উচু অর্থাৎ কচ্ছপের পিঠের মত দেখাবে নিশ্চয়ই। হাতীর কাধ আর কচ্ছপের পিঠ অনেকটা একই রকম দেখতে হয়।

এই ধরনের নারীরা পতিপরায়ণা হয় এবং দাম্পত্যজীবনে তারা সুখী হয়, ইহাই শাস্ত্রবচন।।

মুত্রজঃ কুৰ্ম্ম পৃষ্ঠাভ করিস্কন্ধসমস্তথা।

স সুখ ভাগিনী যস্যাঃ রতিশাস্ত্রে প্রকীর্তিতম্ ।।

নারীর কক্ষ প্রদেশ (অর্থাৎ তলপেট থেকে উরুর উপরিভাগ পর্যন্ত সম্পুর্ন অংশ) যদি অশ্বপাত মত আকৃতিবিশিষ্ট ( অনেকটা পানের পাতার মত ) ) হয় এবং তাতে উর্ধ লােম (খাঁচা খোঁচা লােম ) পুর্ন হয়ে থাকে তবে সে নারী নিশ্চয়ই পরম সুখের অধিকারিনী হয়, এতে সন্দেহ নাই।সুধী, অর্থাৎ মনীষী ব্যক্তিগণ সকলে রতিশাস্ত্র-সম্মত এই বিধান সমর্থন করে থাকেন। 

 কক্ষোংশঙ্খদলকার উদ্ধ লােমসমস্বিতা।।

সুধীভিঃ কথিত যস্যাঃ শুভা সা সুখভাগিনী৷৷

যে নারীর জঙক্ষা দুটি সুন্দরভাবে গােলাকার, মসৃণ, সােজা আর লেমশূন্য হয়, আর সেই সঙ্গে দুটি জানু সমান হয় অর্থাৎ ছোট বড় বা পৃথক না হয়, সেই নারীর পরম সুখে দিন কাটতে থাকে।

সুবৃত্তে সরলে চৈব জঘে লোমবিবজিতে।। |

সমঞ্চ জানুযুগলং সা ভবে-সুভাগিনী।

এবারে পায়ের তলের কয়েকটি চিহ্ন সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। যে নারীর পায়ের তল পদ্মের মত অর্থাৎ কোমল, মসৃণ, গােলগাল এবং সুদর্শন, সে সুখের অধিকারিনী হয়। পায়ের সঙ্গে পদ্মের তুলনা রতিশাস্ত্রেই করা হয়েছে- অবশ্য হাতের সঙ্গে পদ্মের তুলনা অন্যান্য শাস্ত্রে করা হয়েছে।

পায়ের তল ভাগে যদি বস্ত্রচিহ্ন হলচিহ্ন বা পদ্মচিহ্ন থাকে তবে তা খুবই শুভ। এরূপ চিহ্নবিশিষ্ট নারীকে উচ্চস্তরের নারী বলে জানতে হবে। নীচকুলে তাদের জন্ম হলেও তারা পরম সুখে দিন কাটাবে—এ বিষয়ে সন্দেহমাত্র নেই। সে নারী রাজপত্নী হবার উপমুক্ত।

বজ্ৰাজ-হল চিহ্নঞ্চ মস্যাঃ পাদতলে স্থিত।

রাজপত্নী তু সা জ্ঞেয়া রাজভােগ-প্রদায়কম্ ।।

যে নারীর দাতগুলি চক্চকে সুন্দর সাজান, দাতের মধ্যে মধ্যে ফাক না থাকে অর্থাৎ দতগুলি ঠিক কুন্দফুলের মত দেখায়, যার কণ্ঠের স্বর সুমিষ্ট (অর্থাত ঘ্যান ঘ্যানে নাকি সুর কিংবা কর্কশ স্বর যার কণ্ঠে বের হয় না )-কণ্ঠের স্বর ঠিক বাশীর ধনির মত মিষ্ট ও মনােহর, সে নারী সুথভাগিনী হয়ে থাকে।

রতিশাস্ত্রে আরও লক্ষণ বর্ণনা করেছেন মহাদেব। নারী বদনমন্ডোল বেশি লম্বাটে, চোয়াড়ে বা গালভাঙা এগুলি ভাল চিহ্ন নয়, আবার ঠিক চাদের মত গোলাকারও ভাল নয় (যদিও কবিরা চন্দ্রমুখী বলে নারীর উপমা দেন, কিন্তু রতিশাস্ত্রমতে তা সুলক্ষণ নয়)। যে নারীর বদনমগুল ঠিক বর্তুলাকার, এটি খুব ভাল লক্ষণ।।

বর্তুলাকার মােটামুটি গােল তবে একটু চাপা। অধর ওষ্ট নারীর বিম্বের মত টকটকে লাল হওয়া খুব ভাল রতিশাস্ত্র মতে ।।

নারীর দুটি নাকের ছিদ্র সমান হওয়া ভাল লক্ষণ—ছােট বড় হওয়া ভাল লক্ষণ নয়।

উপরে বর্ণিত সমস্ত লক্ষণ যে নারীর দেহে থাকে, সে পরম সুখে দিন কাটায়। শাস্ত্রোক্ত ভাষায় :

কুন্দপুষ্পসমা দন্তাঃ স্বরেণ বংশিকাসমা।

মুখং হি বত্ত লং চৈব অধরো বিম্ব সন্নিভৌ।।

তথা সমপূৰ্য নাসা ভবেদ বৈ সুখ ভাগিনী ।

যদি কোনও নারীর চক্ষুপল্লবের উপরে গৌরবর্ণ (সাদা) রেখা দেখা যায় তবে সে নারী দুঃখভাগিনী হয়ে থাকে, এতে কোনও সংশয় নেই।

গৌরবর্ণা চ যা রেখা যদি স্যাৎ নেত্রসংস্থিত।।

সা নারী দুঃখভাগিনী নাত্ৰ কাৰ্য্য বিচারণা।

যে নারীর দুটি চোখ নীল উৎপলের মত (অর্থাৎ নীল রঙের পদ্মের মত) বিস্তৃত, এবং তার দুটি প্রান্ত ক্রমশঃ সরু হয়ে গেছে, সে নারী যাবজ্জীবন সুখভােগ করে। পদ্মের মত চোখ অর্থাৎ টানা টানা চোখ যা খুললেও সম্পূর্ণ খােলে না—অনেকটা যাকে হরিণীনয়না বলে শাস্ত্রে বর্ণিত হয়েছে এরূপ চোখ |

এরুপ চোখ দুটি নাকের দু পাশের সঙ্গে সংলগ্ন হবে এবং টানা টানা হওয়ায় যেন আকর্ণ বিস্তৃত বলে মনে হবে।

এমনি সুন্দর চোখের অধিকারিণী নারী প্রচুর বিদ্যা অর্জন করে এবং পরম সুখে দিন কাটায়।

নীলােৎপলনিভঃ চক্ষুনসালগ্নং সলকম ।

পৃথুলে বাজেনিভে তাং বিদ্যা সুখভাগিনীম।

যে নারীর চুল গুলি আপনা থেকেই তেল-ডেজানাে চুলের যত মসৃণ, চিক্কণ ও কোমল থাকে – অর্থাৎ তেলে না ভেজালেও তৈলাক্তের মত দেখায় এবং সেই চুলগুলি নীলবর্ণ ও কুঞ্চিত থাকে, সে রমণী চিরসুখ-ভাগিনী হয়- সেই নারীকে সৰ নারীদের মধ্যে অগ্রগণ্যা বলা হয়ে থাকে। শাস্ত্রে তাকে রমণীশ্রেষ্ঠা বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

স্নিগ্ধা নীলা মূদৰে যুদ্ধ জোঃ কুঞ্চিতাস্তথা।।

ধ্রুবং সা রমণীশ্রেষ্ঠ চিরং সুখস্য ভাগিনী।

হাটবার সময় যে নারীর দুটি পায়ের কনিষ্ঠা আর অনামিকা এই দুটি আঙুল ভূমি স্পর্শ করে না, সেই নারীকে কুলটা কলে জানা উচিত। সে নারী সারা জীবন ধরে নানা দুঃখ ভােগ করে থাকে।

কনিষ্ঠিকা গতো যস্যাঃ অথবানামিকাঙ্গ লিঃ।।

ন শতি ধরাং সৈব কুলটা দুঃ ভাগিনী।।

যদি কোনও নারীর দুটি চোখ কেকরা অর্থাৎ ট্যারা হয়, সে নারীর স্বভাৰ প্রচণ্ড অর্থাৎ তার কণ্ঠস্বর ব্যবহার ইত্যাদি তীব্র হয়ে থাকে। উগ্রভাবে সে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায় এবং নানা লােকের নিন্দা ভাগিনী হয়।।

যদি কোনও নারীর গলা ছোট এবং স্থুল হয় তবে সে আজীবন মনুঃখ ভােগ করে জনসমাজে ঘুরে বেড়ায়। গলা স্থুল অর্থে ছোট এবং মােটা ঘার বিশিষ্ট গলা বােঝান হয়েছে। শাস্ত্রোক্ত ভাষায় :

বৃহৎ রতিশাস্ত্র নয়নে কেকরে যস্যাঃ সা প্রচণ্ডস্বভাবিক।

স্থূলগণ্ডাঃ চ যা নারী সা হি জীবনদুঃখিনী। 

যদি নারী হাসলে তার গালে কৃপ পড়ে অর্থাৎ টোল পড়ে তবে এটি অত্যন্ত কুলক্ষণ বলে জানতে হবে। টোল ৰা কুপ বলতে এখানে সামান্য খাঁজ নয়, গােলাকার গভীর গর্তকে কূপ বলা হয়ে থাকে।

এই শ্রেণীর নারীরা নিশ্চয়ই ব্যাভিচারিণী হয়। তারা যত দিন বেঁচে থাকে মহাকষ্টে দিন কাটায়।।

হাসতে গণ্ডয়ােশ্চৈব সীতে কূপে ভবিষ্যত।

কুলটা সা ভবেন্নারী আজন্ম-দুঃখ-ভাগিনী।

নারীর হাতে অর্থাৎ করতলে কনিষ্ঠার নিচে থেকে তর্জনীর দিকে যে রেখাটি যায় অর্থাৎ যাকে রতিশাস্ত্র অনুযায়ী আয়ুরেখা বা জ্যোতিষ শাস্ত্রে হৃদয়রেখা বলে। এই রেখা যদি কোন জায়গায় কাটা না থাকে অর্থাৎ ছিন্ন হয়ে না যায় তাহলে সে ঐশ্বর্য্যে পূর্ণ হয়ে পরম সুখে দিন কাটায়। জীবনে সে নারীকে কখনও দুঃখ ভােগ করতে হয় না। এটাই শাস্ত্রের কথা।

কনিষ্ঠাত্তৰ্জ নীং যাবৎ রেখা ভবতি চাক্ষতা।

সা সুখী সুখভাগিনী সর্বৈশ্বৰ্য্য-সমন্বিত৷৷৷

এবারে মহাদেব তার রতিশাস্ত্রে নারীর এমন একটি লক্ষণ বর্ণনা করলেন যা অত্যন্ত খারাপ লক্ষণ। এরূপ লক্ষণ যদিও খুব বেশি দেখা যায় না, তবু যে সব নারীর দেহে এই চিহ্ন দেখা যায় তাদের দুঃখকষ্টের শেষ থাকে না।

যদি কোন নারীর একটি কান ছােট অন্যটি বড় হয় অথাৎ দুটি কান সমান হয়ে ছােট বড় হয় আর তার স্তনদ্বয়ে লােম জন্মে, সেই নারী যতদিন বেঁচে থাকে, ততদিন তাকে মহাক্লেশে দিন কাটাতে হয়। চিরদিন তাকে চোখের জলে ভাসতে হয়।

বিষমৌ শ্রবণােস্যাঃ স্তনো রােমসমন্বিতে।

জীবন্তী জীবনং দেবি তস্যাঃ ক্লেশায় কেবলম।

যে নারীর করতলে মীনরেখা বা মাছের আকৃতির রেখা থাকে সুভাগা, স্বস্তিকচিহ্ন থাকলে কুলের যশ বৃদ্ধিকারী সন্তানের জননী হয়। যার হাতে পদ্মচিহ্ন থাকে সেই নারী রাজমহিষী হয়। তার গর্ভে যে ছেলে হয় সেও বিখ্যাত হয় এবং রাজপদ প্রাপ্ত হয়ে থাকে।

যে নারীর হাতে প্রকার বা তােরণের চিহ্ন থাকে সে যদি খুব গরীবও হয় এমন কি দাসকুলে জন্ম নিলেও সে পরম সৌভাগ্য লাভ করবে। রাজরাণীর মত ধনীর ঘরে তার বিবাহ হবে এবং সে রাজরাণী পর্যন্ত হতে পারে।।

মৎস্যেন সুভগা নারী স্বস্তিকেন চ সুপ্রজা।

পদ্মেন ভূপতেঃ পত্নী জনয়েৎ ভূপতিংসুতং ।

প্রাকারতােরণং রেখা যস্যাঃ পাণিতলে ভবেৎ।

অপি দাসকুলে জাতা: রাত্বিমধিগচ্ছতি ॥

যে নারীর হাতে ত্রিশূল, খড়গ, শক্তি বা দুন্দুভির রেখা থাকে সেই নারী পৃথিবীর মধ্যে কীর্তিশালিনী হয়। নারীর হাতে অঙ্কুশকুল মাছের চিহ্ন থাকলে সেই নারীর পতি দীর্ঘদিন জীবিত থাকে। সে নিজেও বহু সন্তানের জননী হয়ে সুখে দিন কাটায়।

ত্রিশূলাসি গদাশক্তি দুভ্যাকৃতিরেখয়া।।

নিতম্বিনী কীর্তিমতী সা নারী পৃথিবীতলে৷

অঙ্কুশং কুণ্ডলং যানং যস্যা পাণিতলে ভবেৎ।

দীর্ঘায়ুষং পতিং প্রাপ্য পুত্রবৃদ্ধি ভবেৎ ধ্রুবং ৷৷

যে নারীর হাতে বজ্র আর প্রাসাদের রেখা থাকে সে নারী তীর্থকর পুত্র পায় অর্থাৎ তার পুত্র তাকে বহু তীর্থ ভ্রমণ করায়।

যে নারীর পায়ের নীচে বা চরণতলে লম্ব বিস্কৃত রেখা থাকে সে রাজার স্ত্রী হয়ে থাকে। যে নারীর পায়ের গড়ন স্নেহযুক্ত অর্থাৎ  চাকচিক্য শালী, মনোহর, উন্নত ও তাম্রবর্ন নখযুক্ত হয় আর দুটি পায়ের তলে মীন, অঙ্কুশ, রক্ত, প্রভৃতি চিহ্ন বিদ্যমান থাকে, সেই নারী কল্যাণকারিণী হয়। সে পরিবারের ও সকলের সুখ বৃদ্ধি করে এবং নিজেও সুখী হয়।

হস্যঃ পদতলে রেখা সা ভবেৎ ক্ষিতিপাঙ্গনা।

তামনখো মিন্নতো নাৰ্য্য চরণেী শুভে।।

মৎস্য অধুঃ শব্দচিহ্নেী চক্রলাঙ্গল লক্ষিতে।

যে নারীর অঙ্গুলি খুব দীর্ঘ হয় সে কুলটা হয়ে থাকে। যে নারীর পায়ের আঙ্গুল গুলি রুশ বা সরু সরু,সে নারী অত্যন্ত ধনহীনা বা গরীব হয়ে থাকে। যে নারীর পায়ের আঙ্গুলগুলি ছোট ছোট সে বেশিদিন জীবিত থাকে না। তাকে অল্পদিনের মধ্যে ইহলীলা শেষ করতে হয়। আর যে নারীর পায়ের আঙ্গুলগুলি কুটিল বা আকা বাকা ও মােটা গাটযুক, সে ভগ্ন অবস্থায় সারা জীবন অতিবাহিত করে। শাস্ত্রের ভাষায়-~~~

দীর্ঘাঙ্গুলিভিঃ কুলটা কৃশাভিরতিনিধনা।

হ্রস্বায়ুষ্যা চ হ্রস্বাভি গ্লাভিভুগ্নবর্তিনী।

যে নারীর নিতম্ব বেশ উন্নত ও মৃগীর মত চতুরস্র সেই নারী কল্যাণকারিণী হয়ে থাকে।যে নারীর নিতম্ব উন্নত, মাংসল ও বিস্তৃত হয় সেই নারী পরম সুখে কালাতিপাত করে। যে নারীর নিতম্ব সরু এবং মাংসল নয় সে দুঃখে দিন কাটায় সন্দেহ নেই।

সমুন্নতো নিত পুশ তুরনো মজশা ।

নিতবিখো নাতীণা উতে। মাংস ধু:

মহাজোগায় লাগেজ তাহেশখায়।

যে নারীর  নাভি বেশ প্রশস্ত  গভীর ও দক্ষিনাবর্তবিশিষ্ট  অর্থাৎ ডান দিকে পাক দিয়েছে সে কল্যাণকারিনী ও শুভফলদায়িনী  হয়ে থাকে। যে নারীর পেট অত্যন্ত বৃহৎ সে নিঃসন্তান ও দুর্ভাগিনী হয়। যে নারীর জঠর লম্বিত অর্থাৎ লম্বা হয়ে নিছে আসে, অল্প দিনের মধ্যে তার শশুর ও দেবরের প্রান বিনাশ হয়ে থাকে।

তিনি প্রশস্ত জঙিণাবকি ।

শিলাসী নারী নিরল তাপ।।

কাজ করা শুৰি শ্বশুরালি দেবর। |

যে নারীর পেট কুন্তাকৃতি  অর্থাৎ পেট কুন্ত এর মত সে দরিদ্র হয়। যে নারীর উদর কুমড়োর মত সে অসৎ বংশীয় হয়।

 

যে নারীর অঙ্গ মৃদু নরম দেহের চর্ম,মুখ কোমল মনােহর, চক্ষু মৃগচক্ষুর মত অর্থাৎ হরিপনয়না, জাদু, পেট মৃগের জানু ও পেটের মত সেই নারী যদি গরীবও হয়, এমন কি দাসীর গর্ভেও যদি তার জন্ম হয় তবু সে ধনী হয়—সে রাজার পত্নী অর্থাৎ রাজমহিষী পর্যন্ত হতে পারে।

মুগনেত্রা মৃঙ্গী চ মৃগজানু মৃগােদরী।

দানীজাতা চ সা কন্যা রাজানং পতিমাপ্লয়াৎ।।।

যে নারীর দুটি বাহু রেখাবিশিষ্ট অর্থাৎ বহু শিরাযুক্ত, যে নারীর মুখে অনেক তিল থাকে, অধর ও ওষ্ঠ সরল অর্থাৎ দুটি ঠোঁটই বাকা না হয়ে সােজা খাের মত লম্বা, সে নারীর পতির মৃত্যু হয়—অর্থাৎ সে বিধবা হয়।

যস্য। রেখাথিতে বাহু মুখে চ তিলকং ধ্রুবং।

সরলে অধরেষ্টো চ ক্ষিপ্রং বিধবালক্ষণম্।।

যে নারীর গ্রীবাদেশে অর্থাৎ গলায় তিনটি রেখা দেখা যায়, সে চির সুখ ভোগ করে। এই লক্ষণটি খুবই ভাল সন্দেহ নাই। যে নারীর গ্রীবার তিনটি রেখার সঙ্গে পেটেও ঠিক তিনটি রেখা অর্থাৎ তিনটি বলী দেখা যায়, তার সুখের সীমা থাকে না। শুধু নারী নয়, পুরুষের পক্ষেও এই রেখা খুব শুভ। গলা ও পেটে তিনটি রেখা থাকলে সে পুরুষ রাজপদ পায়। পুরুষের ললাটে তিনটি রেখা থাকলে তা খুব শুভ। সে রাজ- মনুগ্রহ লাভ করে।

যস্যাস্ট্রিরেখা গ্রীবায়াং কুক্ষিরেখাস্তথৈব চ।।

সুখস্য ভাগিনী স্যাচ্চ ভূপতিস্যাল্ললাটকে।

যে নারী গৌরাঙ্গ। অর্থাৎ টকটকে ফর্সা রঙ যার বা কৃষ্ণবর্ণ বা উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ। যার অঙ্গ, দাত বদন, স্তন ও মস্তক স্নিগ্ধ সে নারী চিরদিন সুখ ভােগ করে থাকে।

যার মুখ চন্ধের মত মুনােহর, শরীরকান্তি তরুণ অরুজের ফর্সা চোখ বিস্তৃত অর্থাৎ আয়ত ও লােহিত আভাযুক্ত থাকে।তরুণ অরুণের মত টকটকে লালচে তিত আভাযুক্ত থাকে, তাকে বিবাহ করলে তার স্বামীর কল্যাণ লাভ হয়ে থাকে।

গৌরাঙ্গী বা তথা কৃষ্ণা স্নিগ্ধং অঙ্গং মুখং তথা।

দস্তাঃ স্তনং শিরাে যস্যা: সা কন্যা সুখমেধতে ।।

চন্দ্রমুখী চ যা কন্যা বালসূৰ্যসমপ্রভা।

বিশালনেত্রা রক্তাক্ষী তাং কন্যাং বরয়েৎ বুধঃ ।।

যে নারীর পৃষ্ঠ ও পাশের হাড়গুলি অন্তর্নিমগ্ন ও পৃষ্ঠ মাংসল অর্থাৎ সমান্ত। হাড়গুলি মাংসে ঢাকা থাকে, সে নারী কল্যাণদায়িনী হয়ে থাকে যে নারীর পিঠ লােমে পরিপূর্ণ সেই ঐ পতিহীন হয়ে থাকে সন্দেহ নেই। আর যে নারীর পৃষ্ঠদেশ ভগ্ন অর্থাৎ ভাঙ্গা ভাঙ্গা, হাড়গুলি উচু উচু হয়ে ঠেলে উঠেছে ও তাতে অনেক শিরা দেখা যায়, সেই নারী দুঃখ ভােগ করে থাকে।

অন্তর্নিমগ্নরংশাস্থিঃ পৃষ্ঠ স্যাৎ মাংসল শুভা।।

পৃষ্ঠেন রােমযুক্তেন বৈধব্যং লভতে ধ্রুবম্।।

ভূগ্লেন বিনতেনাপি সশিরেণাপি দুঃখিত।

যে নারীর স্তনযুগল মূলে স্থুল ও ক্রমশ অগ্রভাগে কৃশ ও সূক্ষ্ম এবং লম্বাটে আকারের, তারা বাল্য অবস্থায় সুখভােগ করে, কিন্তু বৃদ্ধ অবস্থায় দুঃখ ভোগ করে থাকে। যে নারীর দক্ষিণ (ডান) স্তন উচ্চ সেই নারী পুত্রবতী ও সকলের শ্রেষ্ঠ হয়, আর যার বাম স্তন উন্নত সেই নারীর একটি কন্যা ভাগ্যশালিনী হয়।

হলে মূলে ক্ৰম কৃশাবগ্রে তীক্ষ্ণী পয়ােধরো।

সুখদৌ বাল্যকালে তু পশ্চাদত দুঃখদে।

দক্ষিণােন্নবক্ষা পত্রিী বামে তবু চা কন্যা সৌভাগবতাম ।

মারেফতের জ্ঞান কিভাবে অর্জন করতে হয় বা আধ্যাত্বিকতা জাগরনের পদ্বতি।

মারেফতের জ্ঞান কিভাবে অর্জন করতে হয় বা আধ্যাত্বিকতা জাগরনের পদ্বতি।

মারেফতের জ্ঞান কিভাবে অর্জন করতে হয়ঃ সৃষ্টিগত ভাবে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে মারেফত বা আধ্যাত্বিকতা লুকায়িত রয়েছে। কারন আমাদের প্রত্যেকের উৎপত্তি পরমাত্মা থেকে। আর আধ্যাত্বিকতার মুল হচ্ছে পরমাত্মা। কিন্তু মারেফত বা আধ্যাত্বিকতা সকলের মধ্যে প্রকাশ পায়না। যাদের মন যতটুকু পরিমান পরমাত্মার নিকটে অবস্থান করে ততটুকু পরিমান আধ্যাত্বিকতাই তাদের মধ্যে জাগরিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে পৃথিবিতে খুব অল্প সংখ্যক লোকের মনের ভাব পরমাত্বার ভাবের কাছাকাছি রয়েছে। আর যাদেরই বা কাছাকাছি রয়েছে তাও খুব অল্প ভাব। কারন মানুষের ভাবনা পরমাত্মার দিকে যেতে চায় না। মানুষ পরমাত্মার ভাবনা ভাবতে চায় না। মনুষ ভাবতে চায় না তার মূল কোথায়? সে কোথা থেকে এসেছে? তাই মানুষ তার মূল পরমাত্মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে তাদের মনে আধ্যাত্বিকতাও জাগ্রত হয় না।

মোটকথা যে যতটূকু পরমাত্মার সাথে বা সৃষ্টির মুলের সাথে সংযুক্ত রয়েছে তার ততটুকু আধ্যাত্বিকতা রয়েছে। আর আমাদের সাথে পরমাত্মার বা সৃষ্টির মূলের সম্পৃক্ততা নেই বলে আমাদের আধ্যাত্বিক জাগরনও হয় না।

মারেফত

আর কারো খুব অল্প আকারে মারেফতের জ্ঞান বা আধ্যাত্বিকতা জাগরিত হয়। আবার কারো একটু বেশি জাগ্রত হয়। তবে চুরান্ত পর্যায়ে জাগ্রত হয় কেবল মহাপুরুষদের মাঝে। আর এই পৃতিবীতে মহাপুরুষ বড়ই দুর্লভ। তবে যার মধ্যে যতটুকু মারেফতের জ্ঞান বা আধ্যাত্বিকতা জাগরিত হয় ততটুকুকে লালন করে আস্তে আস্তে আধ্যাত্বিকতা বাড়াতে হয়। কারন আধ্যাত্বিকতা জাগরন কোন সাধারন বিষয় নয়। এটা সৃষ্টিগত ভাবে মনের মধ্যে থাকতে হয়। আর সৃষ্টিগত ভাবে মনের মধ্যে না থাকলে এটা জাগানো সম্ভব নয়।

উপরে উল্লেখিত কথাগুলি সকলের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটা শুধু উচু স্তরের সাধকদের বেলায় প্রযোজ্য। কারন আধ্যাত্বিকতার চুরান্ত পর্যায়ে পৌছার অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এটা বর্ণনা দেওয়াও সম্ভব নয়। যে ঐ স্তরে পৌছেছে কেবল সেই তা বুঝতে পারবে। এই জন্য আধ্যাত্বিক মহাপুরুষ জালাল উদ্দিন রুমি (রহ) বলেছেন, যদি সূর্য পৃ্থিবীর কাছে চলে আসে পৃথিবী তা সহ্য করতে পারবে না। পৃথিবী জ্বলে পুরে ছারকার হয়ে যাবে। সেই রুপ ভাবে মানুষের হৃদয়ে যদি হঠাৎ উচু স্তরের আধ্যাত্বিকতা প্রকাশ পায় তাহলে মানুষ সহ্য করতে পারবেনা। মানুষের হৃদয় জ্বলে পুরে ছারকার হয়ে যাবে।

উপরের কথাগুলি এইজন্য বললাম যে, আমরা আধ্যাত্বিকতার অল্প অনুভুতি পেয়েই মনে করি যে, এটাই বুঝি আধ্যাত্বিকতার পরিপক্কতা। না এটা মোটেই না। এটা আধ্যাত্বিকতার ছুয়া মাত্র। আমি আগেই বলেছি পূর্ণ আধ্যাত্বিকতা কোন সাধারন বিষয় নয়। পবিত্র মহাগ্রন্থ গীতাতে বলা হয়েছে, সাধুকুলে জন্ম লাভ করা দুর্লভ জনম। অর্থাৎ একজন আধ্যাত্বিক মহাপুরুষের সংস্পর্শে থাকাই দুর্লভ বা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। তাহলে পুর্ন আধ্যাত্বিকতা লাভ করা যে কত বড় দুর্লভ বিষয় তা একটু ভেবে দেখুন।

তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমাদের হৃদয়ে আধ্যাত্বিকতা যদি জাগরিত নাও হয় তবুও বার বার শ্রেষ্টা করা উচিত। কারন জাগ্রত করার শ্রেষ্টা করাও পরম সৌভাগ্যের বিষয়। পৃথিবীতে কয়জনই বা এর শ্রেষ্টা করে।

মারেফতের জ্ঞান বা আধ্যাত্বিকতা জাগরনের পদ্ধতি এবং মারেফত কিভাবে অর্জন করতে হয়।

১। পজেটিভ চিন্তা চেতনাঃ

মানুষ কর্মমুখী। কর্ম করেই মানুষকে বাঁচতে হয়। কিন্তু কর্মের মূলে রয়েছে চিন্তা চেতনা বা মনের ভাব। মানুষের প্রত্যেকটি কর্মের মূলে যেন

পজেটিভ চিন্তা থাকে। মানুষ যেন সব সময় সৎ চিন্তা করে। মানুষ যেন সবসময় নিজের সার্থের কথা চিন্তা না করে পরার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। মানুষের কোন কর্ম বা চিন্তাই যেন তার নিজের স্বার্থের জন্য না হয়। মানুষ যেন অসৎ চিন্তা থেকে দূরে থাকে। কারন মানুষের মনের প্রিত্যেকটি চিন্তাই মনের মধ্যে স্তরে স্তরে জমা হতে থাকে। আর স্তরে স্তরে জমাকৃত পজিটিভ চিন্তার সমষ্টি যদি অধিক পরিমান হয় তবেই মানুষের মনের মধ্যে আস্তে আস্তে আধ্যাত্বিকতা জাগরিত হতে শুরু করে।

২। ধ্যানঃ

আধ্যাত্বিক জাগরনের জন্য ধ্যান হচ্ছে অন্যতম শক্তিশালী পদ্ধতি। সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যত মহাপুরুষ পৃথিবীতে এসেছেন তাদের জীবনী থেকে জানা

ধ্যানযায় যে তারা প্রত্যেকেই জীবনের কোন না কোন সময়ে ধ্যান সাধনা করেছেন। যেমন ইসলাম ধর্মের প্রচারক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) একটানা ১৫ বছর হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যান সাধনা করেছেন। বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক গৌতম বুদ্ধ সারাজীবন ধ্যান সাধনা করেছেন। হিন্দু ধর্মের গীতাতে ধ্যান সাধনার উপরেই সবছেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মোট কথা আধ্যাত্বিকতা জাগরনের সবছেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে ধ্যান। ধ্যানের দ্বারাই মানুষ তার নিজের মধ্যে আধ্যাত্বিক জাগরন ঘটাতে পারে।

৩। নিজেকে প্রকৃতিতে বিলিন করে রাখাঃ

এমন ভাবে জীবন যাপন করা যেন জীবনে নিজের কোন ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা না থাকে। সবই যেন প্রকৃতির ইচ্ছা।প্রকৃতির ইচ্ছায় যেন আমরা বেছে আছি। আমার বাড়ী আমার গাড়ী এগুলো যেন কিছুই আমার নয়। এগুলোর প্রতি যেন আমার আধিক মায়া বা আকর্ষন না থাকে।মারেফত আমার বলতে যেন কিছুই নাই। আমি যেন অল্প কয়েকদিনের জন্য এখানে এসেছি। এভাবেই প্রকৃতির কাছে নিজেকে সোপর্দ করতে হবে।এভাবেই নিজের ইচ্ছা আকাঙ্খাকে প্রকৃতির কাছে বিলিন করে দিতে হবে, তবেই মনের মধ্যে আস্তে আস্তে আধ্যাত্বিকতা জাগরিত হবে।

৪। শ্বাস-প্রশ্বাস এর অনুসরনঃ

জন্ম লগ্ন থেকেই আমরা মনের আজান্তে প্রতিনিয়ত শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ে চলছি। এই শ্বাস প্রশ্বাস আদান প্রদান আমাদের জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ঘটতে থাকে। শ্বাস প্রশ্বাস এর সাথে মনের ভাবের সম্পর্ক রয়েছে। আর মনের ভাবের সাথে আধ্যাত্বিকতার সম্পর্ক রয়েছে। আর যখনই শ্বাস প্রশ্বাস এর অনুসরন করবেন তখনই মন অন্য বিষয় ভাবনা থেকে বিরত হতে শুরু করবে। তখন মন আত্মমুখী হবে।মারেফত

এভাবে মনকে বাহিরের ভাবনা থেকে আত্মমুখী করে তুললে আস্তে আস্তে আধ্যাত্বিকতা জাগরিত হতে শুরু করবে। প্রশ্ন আসতে পারে এটা আপনি কখন করবেন? আপনি প্রতিদিন যে কোন সময় এটা করতে পারেন। যত বেশি করবেন তত ভালো। পারলে সারা দিনই করতে পারেন। কারন এটাতে কাজের কোন ব্যাঘাত ঘটেনা।

৫। গুরু ধ্যান

গুরু ধ্যান হলো মারেফত জাগরনের আরেকটি অন্যতম পদ্বতি। যুগ যুগ ধরে গুরু ধ্যান এর মাধ্যমে তাপসগন আধ্যাতিকতা জাগরন করে আসছেন। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে গুরু ধ্যান পদ্বতি খুবই জনপ্রিয়। বিশেষ করে ইন্ডিয়াতে এর প্রচলন সবছেয়ে বেশি। খাজা মইনুদ্দিন চিশ্তি বু আলীশাহ কলন্দর, আমির খছরু নিজামুদ্দিন আউলিয়া সবাই গুরু ধ্যান এর মাধ্যমে আধ্যাতিকতার উচ্চ শিখরে আরোহন করেছিলেন। আবার মধ্যপ্রাচ্যে ও যে সব মহাপুরুষ আধ্যাতিকতার উচ্চ শিখরে পৌছেছিলেন তারা ও এ পদ্বতির মাধ্যমে উচ্চ শিখরে পৌছেছিলেন। আব্দুল কাদের জিলানী,জালাল উদ্দিন রুমি,ইমাম গাজ্জালী তাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের লালন সাঁই লিখাতে গুরুবাদ এর ধারনা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।