Select Page

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়। ভালো সন্তান বা ছেলে সন্তান আথবা মেয়ে বা কণ্যা সন্তান হওয়ার বিভিন্ন উপায় বা আমল রয়েছে। যেগুলো আনুসরন বা আমল করলে ছেলে বা মেয়ে যে সন্তান জন্ম গ্রহন করে তারা ভালো সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ আমরা বিখ্যাত রতিশাস্ত্র থেকে এসব নিয়ে আলোচনা করব।

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়

বিভিন্ন দিনে নারীগমনের  ফলে পুত্র-কন্যা সন্তানভেদ।

শিব তারপর বললেন, নারীগমন সম্পর্কে যেসব বিধান বললাম, তা ছাড়াও শাস্ত্রে আরও বিধান আছে। যেমন প্রথম বিধান হলাে ঋতুর পর চতুর্থ দিবসে অর্থাং স্নানের পর নারী পতির কাছে যেতে পারে বটে, কিন্তু যে দিন মঘা কিংবা মূলা নক্ষত্র হয় সেদিন ষত্বের সঙ্গ পরিহার করতে হবে। অর্থাৎ সেই সেইদিন কদাচ নারীগমন করবেনা।

এবারে মহাদেব ভিন্নশাস্ত্র অনুসারে কোন দিন কি ধরণের সন্তানের জন্ম হুয়,সে বিষয়ে বর্ণনা করলেন।

তিনি বললেন, ঋতুর চতুর্থ দিবসে গর্ভধারন করলে সেই গর্ভে অল্পায়ু এবং ধনহীন পুত্র জন্মগ্রহন করে। পঞ্চম দিনে গর্ভ হলে কন্যা, ঘষ্ঠ দিনে সুমধ্যম পুত্র হয় । সপ্তম দিনে গর্ভ হলে বন্ধা কন্যা এবং অষ্টম দিনে গর্ভ হলে সেই গর্ভে ধনবান পুত্র উৎপন্ন হয়। নবম দিনে গর্ভধারণ করলে সৌভাগ্যবতী কন্যা, দশম দিনে শ্রেষ্ঠ পুত্র সন্তান লাভ করে থাকে।

একাদশ দিনে গর্ভ হলে অধার্মিক কন্যা এবং স্বাদশ দিনের গর্ভে  শ্রেষ্ঠ পুত্র জন্ম গ্রহণ করে।

ত্রয়ােদশ দিনে গর্ভ হলে সেই গর্ভে মহাপাপীয়সী বর্ণসঙ্করকারিণী কন্যার উৎপত্তি হয়ে থাকে।  চতুর্দশ দিনে যে নারী গর্ভধারণ করে তার সেই গর্ভে ধর্মজ্ঞ কৃতজ্ঞ আত্নবেদী ও দৃঢ়ব্রত পুত্র জন্মে।

পঞ্চদশ দিনে গর্ভ হলে পতিব্রতা কন্যা এবং ষােড়শ দিনে গর্ভধারণ করলে সেই গর্ভে সর্ব ভূতের আশ্রয় স্বরূপ পরম ধার্মিক, সুলক্ষণক্ত, সর্বশ্রেষ্ঠ পুত্র জন্মে। এই পুত্র বংশের সুনাম বৃদ্ধি করে সারা দেশ সেই পুত্রের খ্যাতিতে ভরে ওঠে।

রাত্রে চতুর্থাং পুত্র। স্যাদল্লায়ুধনবর্জিত ।

পঞ্চম্যাং.পুত্রিণী ষষ্ঠাং পুত্রো সুমধ্যমঃ ॥

সপ্তম্যাম প্রজ। যেষিদষ্টমামীশ্বরঃ পুমান।

নবম্যাং সুভগা নারী দশম্যাং প্রবরঃ সুতঃ।

একাদশামধৰ্ম্মা স্ত্রী দ্বাদশ্যং পুরুষােত্তম।

ত্রয়ােদ শ্যাং সুতাং পাপাং বর্ণসঙ্করকারিণীম ।

ধৰ্ম্ম জ্ঞশ্চ কৃতজ্ঞশ্চ আ ত্মবেদী দৃঢ়ব্রত।

প্রজায়াতে চতুর্দশাং পঞ্চদ্যাং পতিব্রত।।

আশ্রয়ঃ সৰ্ব্বভূতানাং ষােড়শ্যাং জায়তে পুমান।

শাস্ত্রে আরও বর্ণনা করা হয়েছে যে স্বামী বা স্ত্রী রােগগ্রস্ত কিংবা

নারী গমনের কালাকাল বিচার।

কোন কোন দিন নারীগমন করা উচিত, কোন দিন উচিত নয়,গমন করলে কোনদিন কি ফল হয়, আর দোষের জন্য নারীগর্ভে যে সন্তানের জন্ম হয়, সে কি প্রকার ফল পায় তা প্রবণ করতে অমার ঝুব ইচ্ছা হয়েছে। হে দেব, ঘদি আমার প্রতি আপনার করুণা দৃষ্টি থাকে, তা হলে এই সমন্ত ষথাষথভাবে আমার কাছে কীর্তন করুন।

শ্রতং পদ্মপুরাণোক্তং রতিশাস্ত্রং মহাত্মনা।
অশ্রতং চাস্তি যচ্চেব তদত্রবীহি মহ্প্বর: ॥
অগম্যাদিবসান ব্রহি গমনে কিং ফলং ভবেং ।
গমনাজ্জায়তে যোহসৌ কীদৃশাে বা ভবিষ্যুতি।
এতৎ সর্ব্বং সমাচক্ষ যদি তে অস্তি কুপাময়ি ।

শিব বললেন-হে দেবি, তুমি যা জিজ্ঞাসা করেছ তা বলছি, মন দিয়ে শােন। হে দেবি, রতিশাস্ত্র সম্পূর্ণ জানতে পারলে তুমি যে পরম জ্ঞানবতী হবে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই। শোন দেবি,

প্রবক্ষ্যামি যৎ পৃষ্টং সাম্প্রতং ত্বয়া।
রতিশাস্ত্রং বিদিত্বা ত্বং লহাজ্ঞানবতী ভবেঃ ।

নারীগমনের নিষিদ্ধ দিন

শিব বললেন -হে পার্বতি, চতুর্দশী, অষ্টমী, প্রতিপদ, পৃর্ণিমা,অমাবস্যা, সংক্রান্তি, একাদশী এই সমন্ত দিন নারীগমনের পক্ষে বর্জনীষ্ জানবে। এ ছাড়াও পিতৃশ্রাদ্ধদিন, যাত্রাকাল অর্থাৎ কোথাও যাত্রার সময়ে ও রবিবার -এই কয়দিনও নারীগমন বিবর্জনীয়। এই সমস্ত দিনে ও সময়ে কখনও নারীগমন করবেনা, তাহলে সদা কুফল ভুগ করতে হয়। এবং বিপদ গ্রন্ত হতে হয়। রতিশাস্ত্রে মহাজ্ঞানী ব্যক্তিরা এইরুপ নির্দেশ দিয়েছেন ।

নারীগমনদোষে পুত্র-কন্যার অবস্থা।

শিব বললেন-হে দেবি, স্ত্রীগমনদোষেই পুত্র-কন্যা দুখঃভাোগী ও অল্পায়ু হয়ে থাকে বলে মনে রাখবে। সেই সব বিষয়েই বিস্তুত বলা হচ্ছ।

বিবাহ হতে না হতেই অর্থাৎ কমল অপূর্ণ থাকলে সেই নারীর সঙ্গে সহবাস করলে যথাসময়ে সেই নারীর গর্ভে থে সন্তান হুয়, সে দীর্ঘজীবী হয় না। আল্প দিনের মধ্যেইি সে মৃত্যু মুখে পতিত হয়ে থাকে। ষদি কোন ব্যক্তি অসুস্থ থাকে তবে সে সময়ে তার নারীগষন করা উচিত নয়। ঘদি সেই গর্ভে কোনও পুত্রকন্যা জন্মে, তবে তারা চিরদিন দুঃখভােগ করে থাকে। অতএব বৃদ্ধিমান ব্যক্তিরা এই সব কথা বিবেচন করে নারীগমন করবে।

 

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়

রাত্রির প্রহরভেদে নারীগমনের ফল ও সেই গর্ভজাত সন্তানেরর অবস্থা।

শিব বললেন হে পার্বতি, রাত্রির প্রহরভেদে নারীগযন করলে যেরূপ ফল হয় এবং সেজন্য পুত্র ও কন্যা হলে তাদের যে অবস্থা হয়, তা বলছি শ্রবণ কর।

হে দেবি, রাত্রির প্রথম প্রহরে নারীগমন করলে তৎ-ঔরসে সেই নারীর গর্ভে যে সন্তান হয়, তা সে পুত্র বা কন্যা যাই হােক, তারা দীর্ঘজীবী হয় না। খুব অল্প দিনেই তার মৃত্যু হয়।

যে লােক রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরে নারীগমন করে, তার ফলে পুত্র কন্যা যা হয়, তারা অবশ্য দীর্ঘদিন বাঁচে, কিন্তু তারা খুব দরিদ্র হয়, তারা সৌভাগ্য লাভ করে না।

হে মহেশ্বরি, রাত্রির তৃতীয় প্রহরে ঘদি কোনও পূরুষ নারীগমন করে, তা হলে সেই নারীর গর্ভে যে কন্যা সন্তান হয়, সে  ব্যভিচারিণী এবং পুত্র হলে যারপরনাই অভাজন হয়। সেই দুর্যয় দুর্মতি  পুত্র চিরদিন পরের দাস্যবৃত্তি করে কালযাপন করে থাবক।

হে প্রিয়ে, সুবুদ্বিযুক্ত প্রতিটি মানুষ নিজের কল্যাপের জন্য এই সমস্ত শাস্ত্র বিশেষ পর্য্যালােচনা করে ঘথাযথ আচরণ  করে থকেন।

রাত্রেপ্ত প্রথমে যাম ঋতুং রক্ষতি যে নর।
তস্থ পুনশ্চ কন্যা বা অচিরাৎ স্রিয়তে প্রুবং ।
গচ্ছেচ্চ কামিনীং কোহপি দ্বিতীয় প্রহরে যদি।
কুমতি-দুজ্জ নষ্চেব দাস্যবৃত্তিং করােত্যসৌ।
চতুর্থ প্রহর যাে হি নারীং গচ্ছতি কামতঃ ।
পুত্রাে স লভতে মত্ত্যা হরিভক্তি পরায়ণং ।

দিনের বেলা নারীগমনের ফল।

শিব বললেন-হে পার্বতি, কি আর তােমার কাছে বর্ণনা করব বল। দিনের বেলা কোন সময়েই কোন পুরুষের নারীবিহার করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি নিজের মঙ্গল চায়, বৃদ্ধিমান, জিতেন্দ্রিয় তার পক্ষে দিনের বেলা কোনও সময়ই নারীগমন করা উচিত নয়। দিনের বেলা নারীগমন করলে সেই গর্ভে যে পুত্র বা কন্যা হয়, তারা দুঃশীল, দুর্দান্ত, দুরাচার ও ধর্মহীন হয়ে থাকে। এতে কোন অন্যথা নেই। রতিশাস্ত্র অনুযায়ী এই বিধান একান্ত অমােঘ ও ধ্রুব, এট। মনে রাখা অবশ্য কর্তব্য ; তাই দিবাভাগে নারীগমন একাস্ত বর্জনিয়।

ছেলে সন্তান হওয়ার আমল বা উপায়

ঋতুর চতুর্থ দিন থেকে চতুর্দশ দিন পর্য্যন্ত নারীগমনের ফল।

এবারে মহাদেব একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয় সম্বস্কে বর্ণনা করতে উদ্যত হলেন। তা হলো ঋতুর চতুর্থ দিন থেকে চতূর্দশ দিন পর্যসন্ত নারীগমনে কি ফলাফল হয়। সেই অবশ্য জ্ঞাতব্য বিষয় বর্ণনা করলেন তিনি।

কোন দিনে নারীগমন করলে তার  গর্ভন্থ সন্তানের কি অবস্থা হয়, তাও বর্ণনা করলেন তিনি।

ঋতুর শেষে চতুর্থ দিন নারী স্নান করলে শুদ্ধ হয়। এর আগে নারীগমন একান্তুভাবে বর্জনীয়-তা আগেই বর্ণন করা হয়েছে।
চতুর্থ দিনেও নারী প্রথম প্রহরে অগম্যা থাকে। কিন্তু পরবতী প্রহরে নারীগমন করলে সেই গর্ভে যে পুত্র হয়, সে পরম ধর্মপরায়ণ হয়ে থাকে।

সুত্রঃ বৃহৎ রতিশাস্ত্র